বিরহের প্রেমের গল্প: বাস্তব কাহিনী।
প্রথম পর্ব - ১
আজকাল ভালোবাসা যেনো ধীরে নিম্ন স্তরে চলে যাচ্ছে। ভালোবাসা মানেই সেক্স বা শারীরিক সম্পর্ক বোঝায়। ভালোবাসার মহত্ত্ব অনেকটাই কমে যাচ্ছে। এর কারণে জন্যই দিন পর দিন ব্রেকআপ বেড়েই চলেছে। তাই বিরহের প্রেমের গল্প নানা ভাবে আমাদের চোখের সামনে দেখতে পাওয়া যায়। দয়া করে পুরো গল্পটি পড়ার চেষ্টা করুন।
বিরহের প্রেমের গল্প রং নাম্বার দিয়ে প্রেম শুরু
ছেলে এবং মেয়ে
আজ এই লেখায় বাস্তবের বিরহের প্রেমের গল্প একটি চিএ তুলে ধরা হবে। একদিন হঠাৎ ছেলের ফোনে এক নতুন নাম্বারে কল আসে, এখানে কাহিনীটি যেনো পড়তে ভালোলাগে তার জন্য ছেলেটির নাম দেওয়া হচ্ছে। ছেলেটির নাম ইসমাইল। যখন নতুন নাম্বারে কল আসে তখন ইসমাইল বলে ছেলেটি বাড়ির কাজের ব্যাস্তার ফলে সেই মুহূর্তে ফোনের কাছে ছিলো না। পরে ইসমাইল রুমে এসে ফোন দেখে, তখন দেখতে পেলো নতুন এক অজানা নাম্বারে কল এসছে। এমনিতে ইসমাইল অজানা কোনো নাম্বারে কথা বলতেও পছন্দ করত না। কারণ আজকাল যুগে নানা ফেক কল বা হ্যাকাররা ও কল করে থাকে, তাই ইসমাইল এড়িয়ে চলে যায় এবং কল করার উপযুক্ত বলেও মনে করল না। কিন্তু কয়েক্ষন পরে ওই একই নাম্বারে একটা মেসেজ আসে, যেখানে লিখা ছিলো “হাই” যেহেতু ইসমাইল হাতের কাছে মোবাইল ছিলো তাই জবাবে “হ্যালো” জানায়। এরপর মেয়েটি ছেলেটিকে জিজ্ঞাসা করে “কে” জবাবে ছেলেটি বলে “তুমি কে? কারণ তুমি আগে কল এবং মেসেজ করেছো”। জবাবে মেয়েটি বলে আমি “সুখী”।
বন্ধুরা মেয়েটির নাম একটু খেয়াল করে রাখবে, কারণ এই নাম নিয়েই পরে ভালোবাসার master keys (মুল চাবি) হয়ে উঠবে। মেয়েটি, ছেলেটিকে (ইসমাইল) নাম জিজ্ঞাসা করেছিল। কিন্তু ছেলেটি কোনো কিছু পরুয়া করিনি। মানে নাম বলার উপযুক্ত বলেও মনে করত না। কম বেশি সকালে - রাতে মেয়েটি মেসেজ করে দিতো, ইসমাইল ঘুম থেকে উঠেছে কিনা বা কেমন আছে! কিন্তু তবুও ইসমাইল কিছু কেয়ার করত না। এইভাবে কথাবার্তা চলতে থাকে, এবং মেয়েটি ইসমাইল সম্পর্কে জানতে শুরু করে দেয় যেমন ধরো; বাড়ি বা বাসা কোথায়, পরিবারের সদস্য কতজন, বিয়ে করেছে কিনা এবং ইসমাইল কি করে আরও অনেক কিছু। তখন ইসমাইল ও মেয়েটিকে তার পরিবার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে এবং মেয়েটি সব কিছু কথা বলে দেয়। হয়ত মেয়েটি নিজের পরিবারের সম্পর্কে তো সব কিছু খুলে বলেছে কিন্তু নিজের ঠিকানা নিয়ে তেমন কিছু বলে নাই। তাছাড়া ইসমাইল নিজের সম্পর্কে কিছু বলতে ভয় হতো, কারণ আজকাল দিনে মোবাইল মাধ্যমে ফেক কল এবং ছেলে হয়ে মেয়ে সাজিয়ে কথা বলা।
তাছাড়া অনেক মেয়েরা রয়েছে, যারা ছেলেদের প্রেমের জালে ফাসিয়ে টাকা নেওয়ার ও ধান্দা করে থাকে এইসব নানা কারণে ইসমাইল নিজের সম্পর্কে তেমন একটা বলতে ভয় করছিল। এছাড়াও ইসমাইল বুঝতেও পারছিল না আদৌও মেয়ের সাথে কথা বলছে নাকি ছেলের সাথে! হয়ত ইসমাইল, মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা ও করেছিল সে ছেলে (পরুষ) নাকি মেয়ে (মহিলা)! মেয়েটি হয়ত ইসমাইলকে স্পষ্ট বলে দিয়েছিল যে, সে মেয়ে বলে! কিন্তু তবুও ইসমাইল বিশ্বাস হতো না। অবশেষে একদিন ইসমাইল তার নাম, পরিবার, কি করে, কিনা করে এবং ঠিকানা সব কিছু মেয়েটিকে খুলে বলল। ইসমাইল এবং মেয়েটি মেসেজ মাধ্যমে কম বেশি কথা বলতে শুরু করে দেয়।
বিরহের প্রেমের গল্প মেয়েটির প্রতি প্রথম ভয়েস কলে'র মাধ্যমে কথা
পরে মেয়েটি, ইসমাইলকে কল করতে বলে। কিন্তু ইসমাইল কল করত না, বেশ এই ভাবে কথা বলা চলতে থাকে। বিরহের প্রেমের গল্পে পরে মেয়েটি কল করে, যেমনি মেয়েটির কল আসে, ওমনি ইসমাইল খুব ভয় পায়, ভয়ে ভয়ে কল রিসিভ করার চেষ্টা করছিল। ওই ভয়টা যেনো ভালোবাসার ভয় ছিলো, যেই ভয়টা পরিভাষা ছিল যেনো তাঁর প্রেমকে না হারায়। অবশেষে দ্বিতীয় বার কল আসার পর ইসমাইল কল তুলে। প্রথমবারের মতো ভয়সে কথা বলতে শুরু করে দিলো। তখন মেয়েটির ভয়েস শুনে ইসমাইলের বিশ্বাস হল সে একজন মেয়ের সাথেই কথা বলছে। এইভাবে হালকার উপরে কথা চলতে থাকে। অধিকাংশ সময় তারা মেসেজের মাধ্যমেই কথা বলত। কিন্তু একদিন মেয়েটি মেসেজের মাধ্যমে ইসমাইল কাছে জানতে চাইলো; “তুমি আমার বন্ধু হবে নাকি দাদা!” যেহেতু এর আগে তাদের মেসেজ এবং ভয়েসের মাধ্যমে বয়স সম্পর্কে জানাজানি হয়ে গেছিলো, কারণ তখন ইসমাইল নিজের বয়স কত তা বলেছিল। ইসমাইল, মেয়েটির বড়ো ভাই অর্থাৎ তার দাদা সমবয়সী ছিল মানে বয়সের গেফ প্রায় ৭-৮ বছর।
ইসমাইল, মেয়েটির কথা শুনে যে, তুমি আমার বন্ধু হবে নাকি দাদা! ওমনি ইসমাইলের খুব কষ্ট হয়। কারণ ততক্ষণে ইসমাইল মেয়েটিকে মন - প্রাণে ভালোই বেসে ফেলেছিলো। হয়তো এর আগে ইসমাইল মেয়েটিকে কিছু খুলে বলেনি, তাই ইসমাইল বলে ছেলেটি এই কথা শুনে সরাসরি মেয়েটিকে বলে যে; “আমি কিছুই হতে চাই না, কারণ আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি।” মেয়েটি এই কথা শুনে ইসমাইলকে বলল; “এটা আবার কি কথা” তখন ইসমাইল বলল যে, “আমি তোমাকে নিয়ে চিন্তা করছি, যেনো মনে হচ্ছে তোমাকে ছাড়া আর কাউকে দেখতে পাচ্ছি না।” মেয়েটি ইসমাইলের ভালোবাসার কোনো জবাব দেয় না, তখন ইসমাইল মেয়েটিকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। এইভাবে যখন চলে তখন মেয়েটি বলে; “তুমি আমাকে ভালোবাসো বলো, তা যদি মা জানতে পারে, মা আমাকে মারবে”। তাছাড়া তখন ইসমাইলকে এটাও জিজ্ঞাসা করেছিল যে ভালোবাসা কি বলে! বন্ধুরা এখানে একটা কথা বলে রাখা ভালো, তা হল; ইসমাইল জীবনে প্রথমবার কোনো একজন মেয়ে এসছে, আর মেয়েটির জীবনেও প্রথমবার কোনো একজন ছেলে এসছে।
ইসমাইল বয়সে পরিপক্ক (mature) অর্থাৎ সাধারণ ভাষায় বলতে গেলে বয়সে “পাকা” হয়ে গেছে। “পাকা” আর “পাকানামি” এই দুই কথা আবার যোগ না করে ফেলেন! অর্থাৎ এখানে এটাই বোঝানো হচ্ছে আসিক এমন এক বয়স হয়ে গেছে যে, সব কিছু বুঝতে পারে। কিন্তু মেয়েটি পরিপক্ক (mature) বয়সে ছিলো না। অর্থাৎ মেয়েটির বয়স খুব অল্প ছিলো। ভালোবাসা নিয়ে মেয়েটি তেমন কিছু একটা বুঝতো না। তখন ইসমাইল ভালোবাসা কি এইসব নিয়ে মেয়েটিকে সব খুলে বলে।
বিরহের প্রেমের গল্প আসিকের প্রতি মেয়েটির প্রথম সাইরি
ভালোবাসা নিয়ে সব কিছু বলার পর, তখন মেয়েটি একটি সাইরি লিখে পাঠায় তা হল; “সাগর চায় জলকে আকাশ চায় তারাকে আমি চায় তোমাকে” যেমনি এই মেসেজটি ইসমাইল দেখে ওমনি মেয়েটিকে “I love you too” বলে ফেলে। বিরহের প্রেমের গল্পে মেয়েটি মেসেজ দেখার পর বলল, এটা শুধু একটা সাইরি তাছাড়া আর কিছু নয়। এই কথা বলার পর ইসমাইলের খুব কষ্ট লাগে। তাই ইসমাইল স্থির করে ফেলল, যাইহোক আর আগে এগোনো যাবে না। এখানেই শেষ করে দেওয়া ভালো, কারণ এইমাত্র প্রেমটা শুরু হচ্ছিল। আগে কষ্ট পাওয়ার চেয়ে এখানেই প্রেম শেষ করা ভালো, যেহেতু মেয়েটি ভালোবাসার জবাব ঠিকঠাক দিচ্ছিল না। অবশেষে ইসমাইল মেয়েটির কাছে ক্ষমা চায়, ক্ষমা চেয়ে বলল - আমাকে ক্ষমা করে দাও, তোমাকে “I Love You” বলার জন্য সরি, সরি, সরি। ইসমাইল এখানে ভালোবাসা শেষ মেসেজ লিখে পাঠায়। পরে মেয়েটি, ইসমাইলকে আর একটি মেসেজ লিখে পাঠায় তা হলো; “রাত জাগাপাখি মতে জেগে আছি আমি বার বার মনে হয় কেমন আছো তুমি”
ইসমাইল এইসব মেসেজ দেখে মেয়েটিকে বলল, চলো আমরা এখানেই সব কিছু শেষ করি, আমি আর আগে আর এগোতে চাই না, যা হচ্ছে তা বাদ দাও। কারণ এর আগেই মেয়েটির সাইরি পড়ে ইসমাইল এর অনেক কষ্ট লেগেছিলো, তাই ইসমাইল আর কোনো কথা এগোতে চাইছিলো না। অবশেষে মেয়েটি, ইসমাইলকে “I Love You Too” বলেই ফেলে। ইসমাইল, মেয়েটিকে একটু জালানোর (কষ্ট) দেওয়ার জন্য বলে; বাদ দাও তুমি আর কল দিয়ো না, আমরা নিজেরা, নিজের মতোই থাকি। পরদেশী বাবুদের, ভালোবাসার কোনো মহত্ত্ব নেই। কষ্ট হলেও নিজেকে সামলে নিতে হবে। চলো এতোদিন কথা বলার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। এই মেসেজটি পড়ার পর মেয়েটির খুবই কষ্ট হয় এবং নানা সাইরি ও লিখে পাঠায়, এবং ইসমাইলকে জিজ্ঞেস করে তুমি কি আমাকে ভালোবাসো না! তুমি কি সত্যি আমাকে ভালোবাসো? মেয়েটি ইসমাইলকে বলছে আমি তোমাকে সত্যি খুবই ভালোবাসি। তোমাকে ছাড়া যেন কিছুই ভাবতে পারছি না, আর তুমি এভাবে কথা বলছো কেনো! আমার খুব কষ্ট লাগছে আমি বাঁচতে পারব না।
বিরহের প্রেমের গল্প বিশ্বাসের প্রতি ভালোবাসা শুরু
এভাবে তারা একের অপর কে মন প্রাণে ভালবাসতে শুরু করে। একের অপরকে না দেখেই বিশ্বাসের মাধ্যমে ভালোবাসতে শুরু করে দেয়। বিরহের প্রেমের গল্পে একদিন তারা নিজেদের ছবি হোয়াটসঅ্যাপ মাধ্যমে আদানপ্রদান করে। তারা একের অপরে মাঝে সব কিছু শেয়ার করতে শুরু করে দেয়, যেমন এক স্বামী ও স্ত্রীর সম্পর্ক হয়ে থাকে সেই রকম তাদের ভালোবাসার সম্পর্ক হয়ে উঠে। মেয়েটির কোন কিছু শরীরের অসুবিধা হলে ইসমাইলকে সবকিছু খুলে বলে দিতো তা মেসেজ হোক বা ভয়েস কল হোক যেই ভাবেই খুলে বলত। হয়তো এখনও তারা সামনাসামনি একের অপরকে দেখেনি। কিন্তু তবুও তারা একের অপরকে খুব ভালোবাসতো। বিশ্বাসের ভিত্তিক করে তাদের ভালোবাসা তৈরি হয়েছিল। ভালোবাসায় যখন তারা হারিয়ে গেছিলো, তখন মেয়েটি তাদের প্রথম ভালোবাসার স্মৃতির কথা ইসমাইলকে বলত যে, তুমি আমাকে আই লাভ ইউ বলার আগে, তোমাকে ভালোবাতাম কিনা তা তো জানতাম না। কিন্তু একটা কথা তোমার কোনো কিছু মেসেজ বা মেসেজ জবাব না আসলে নিজেকে সামলাতে পারতাম না। কারণ তোমার মেসেজ অপেক্ষায় থাকতাম।
তোমার মেসেজ না আসলে যেনো মনে হতো আমার প্রাণ চলে যাচ্ছে। আমার কি সব হতো, তা আমি নিজেই জানতাম না। তারা একের অপরকে নিয়ে খুব সুখে ছিলো। এই দিকে যেহেতু মেয়েটি পড়াশুনা করছিল, তাই ইসমাইল চাইছিল যে মেয়েটি পড়াশোনা করুক। মেয়েটির পড়াশুনার ক্ষেত্রে যা কিছু প্রয়োজন হয় সবকিছু দিয়ে ইসমাইল সাহায্য করতে চাইছিল। কারণ আসিক পড়াশোনা খুবই ভালোবাসে। এমনিতে মেয়েটি অঙ্কে কিছুটা দুর্বল ছিল, তাই অংকে যা কিছু সমস্যা হোক তা বুঝিয়ে দিতো। প্রত্যেকটা বিষয়ের ক্ষেত্রে তাকে সাহায্য করতে চাইছিল। এই দিকে মেয়েটি ধীরে ধীরে বয়সেও স্বাবলম্বী হয়ে উঠছিল। কিন্তু হঠাৎ যেনো তাদের ভালোবাসায় কারোর নজর পড়ে যায়, আর একটা খুব বড়ো অঘট ঘটে যায় যে ঘটনাটা সত্যি খুবই কষ্টদায়ক ছিলো।
নোট: দ্বিতীয় পর্ব অবশ্যই দেখুন।
0 মন্তব্যসমূহ