বিরহের প্রেমের গল্প - 2

বিরহের প্রেমের গল্প: বাস্তব কাহিনী

দ্বিতীয় পর্ব - ২

বিরহের প্রেমের গল্প - 2


আমারা প্রথম ভাগে বিরহের প্রেমের গল্পটিতে দেখেছিলাম যে, রং নাম্বার দিয়ে একজন ছেলে অজানা মেয়ের প্রেমে পড়ে। এবং সে ওই মেয়েকে খুব ভালোবাসতে শুরু করে, পরে তারা একের অপরকে খুব ভালোবাসতে শুরু করে। এখন ও যদি আপনারা প্রথম ভাগ দেখেনি তাহলে বিরহের প্রেমের গল্প লিঙ্ক দেখুন, দয়া করে আপনারা প্রথম ভাগ দেখেননি। প্রথম ভাগ দেখলেই তবেই দ্বিতীয় ভাগের কাহিনী বুঝতে সুবিধা হবে। প্রথম ভাগে আমরা দেখছিলাম  তারা একের অপরের প্রেমের মধ্যে হারিয়ে গেছিলো। কিন্তু হঠাৎ তাদের ভালোবাসায় যেনো কারও নজর পড়ে যায়। যেটা সত্যি খুবই বেদনা দায়ক ছিলো।

বিরহের প্রেমের গল্প মেয়েকে পাএ পক্ষ দেখতে আসা

ছেলেটি একজন কৃষক পরিবারের গরীব ঘরের সন্তান ছিলো। এইদিকে কাজের ব্যবস্থায় ছেলেটি অর্থাৎ আসিক পরিশ্রম হওয়ার ফলে রাতে খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যায়। আসিক যখন ঘুমিয়ে যায় ঠিক তখন মেয়েটি কল করে, কিন্তু আসিক গভীর ঘুমের মধ্যে মগ্ন। মেয়েটি এইভাবে আসিকে রাতভর কল করেই চলেছে, কল করেই চলেছে। পরে সকাল হলে, তাদের কথা হয়। মেয়েটি, আসিকে জিজ্ঞাসা করল কি হয়েছিলো তোমার! তুমি কেন আমার কল উঠাওনি! তখন আসিক ওই মেয়েটিকে সব কিছু খুলে বলে। পরে মেয়েটি, আসিককে বলল, তোমাকে একটা কথা বলার জন্য রাতে এতো কল করছিলাম। কিন্তু তুমি আমার কল উঠাওনি। বিরহের প্রেমের গল্পের মধ্যে আসিক মেয়েটিকে জিজ্ঞেসা করল, কি কথা তাহলে বলো! তখন মেয়েটি বলল, আমাকে পাএ পক্ষ দেখতে আসছে। যেমনটি এই কথা আসিক শুনে, ওমনি যেনো আসিকের মাথায় বিদ্যুৎ চমক পড়ে যায় অর্থাৎ বজ্রপাত পড়ে যায়। কথা শুনে আসিক দীশাহার হয়ে যায় নিস্তব্ধ প্রায়। মূখের ভাষা যেনো হারিয়েই ফেলে। কয়েক মিনিটের জন্য যেনো কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। 

মেয়েটিকে কিছু বলতে চাইছিল কিন্তু কোনো কিছুই বলতে পারছিল না, মুখেতে যেনো আর ভাষা নেই। ঝর্ণা মতো ঝরঝর করে চোখের অশ্রু ধারা বয়েই চলছিলো। কারণ মেয়েটিকে খুব ভালোবেসে ফেলেছিল। আসিক এখনও মেয়েটিকে সামনাসামনি দেখেনি। কিন্তু তবুও মেয়েটিকে খুব ভালোবেসেছিলো। আসিকের চোখের সামনে সবকিছু ভেসেই চলে যাচ্ছে। তাঁর স্বপ্ন তিলতিল করে তছনছ হয়ে যাচ্ছিল। স্বপ্নের সুখের ঘর ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছিল। তাদের সামনাসামনি দেখা না হওয়ার আগেই যেনো সব শেষ হয়ে যাচ্ছিল। এমনি আসিক মেয়েটিকে পাওয়ার জন্য কিছু করতে পারছিল না কারণ আসিকের এবং মেয়েটির বাড়ির দূরত্ব ছিলো কমপক্ষে সাড়ে চারশো কিলোমিটার (৪৫০) অধিক। সাড়ে চারশো কিলোমিটার কথা কি ভাবা যায়!! আসিক চেয়েও কিছু করতে পারত না। আসিকের সব কিছু থেকেও যেনো পঙ্গু হয়ে হয়ে উঠেছিলো। আসিকে অনেক কাঁদতে হয়। আসিক কোনো মতেই তার প্রিয়তমাকে হারাতে চাইছিল না। এমনিতে মেয়েটি ও ছেলেটিকে ভালোবাসতো, মেয়েটিও চাইছিলো না যে, সে আসিক ছাড়া আর অন্য কাউকে আপন করে বলে। মেয়েটিও আসিকের জন্য পাগল ছিলো। 

মেয়েটি ছেলেটিকে বলছিলো, আসিক আমি তোমাকে না পেলে আমি কিন্তু মরে যাবো। কিন্তু তবুও অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারি না, আর তা কখনই পারব না। আমি শুধু তোমাকে চাই। দুইজন দুইজনকে নিয়ে খুব চিন্তিত। পরস্পর একের অপরকেই চাইছিল, যেনো তাদের মাঝে আর কেউ না থাকে। নিজেদের সামলানোর পর তারা সিদ্ধান্ত নিলো, যে কিভাবে এই প্রস্তাব ঠেকানো যায়। হয়তো এটা শুধুমাত্র মেয়েটিকে দেখতে আসছিল। কিন্তু প্রস্তাব দিতে নয়। কিন্তু তবুও প্রস্তাব চেয়েও অধিক ছিলো। এইদিকে আসিক, পাছে মেয়েটিকে হারিয়ে না ফেলে তার জন্য ছটফট করছিল।

বিরহের প্রেমের গল্প পাএ পক্ষকে বারণ করার উপায়

তখন তারা সিদ্ধান্ত নিলো যে পাএ পক্ষকে কিভাবে বারণ করা যায়! এমন একটি উপায় খুঁজতে হবে যেই উপায়ে কারোর কোনো কিছু অঘটন না ঘটুক। বিরহের প্রেমের গল্পে যেহেতু মেয়েটি মাকে বেশি ভালোবাসতো, সেই সময়ে ওই ভালোবাসাটা কাজে লাগানো হয়। মেয়েটি মাকে বলে, মা আমি এখন পড়তে চাই। আমি এখন কোনো বিয়ে করতে চাই না, মা আমি পড়ব। তখন মেয়ের মা, তার মেয়ের কথা শুনে মেনে নেয় বা সহমত প্রকাশ করেন। এবং পাএ পক্ষ যারা আসতেছিল তাদেরকে বারণ করা হয়।

বিরহের প্রেমের গল্প ছেলেটির অর্থাৎ আসিকের আনন্দের বহির্প্রকাশ

যেমনি পাএ পক্ষ আসছে না এই কথা শুনে আসিক এবং মেয়েটি বড় করে নিঃশ্বাস নেয়। এবং খুশিতে যেনো আসিক পাগল হয়ে উঠে। এইদিকে খুশিতে আসিক তার পরিবারের সবাইকে মিষ্টি মুখ করায় সাথে, সেই আনন্দ উপভোগ করার জন্য একটা ছোট করে ভোজ আয়োজন করে ফেলে অর্থাৎ সবাইকে মাটন রেসিপি খাওয়ায়। বিরহের প্রেমের গল্পে আসিকের এই দৃশ্য দেখে, তার পরিবারের সদস্যরা (লোকেরা) হতভম্ব অর্থাৎ আশ্চর্য বোধ প্রকাশ করেন। তখন আসিকের পরিবারের লোকজন, আসিকে জিজ্ঞাসা করলো মিষ্টি মুখ এবং সুস্বাদু খাবার খাওয়ার কারণ কি? আসিক জবাবে তেমন কিছু তো দেয়নি। কিন্তু শুধু এটাই বলেছিলো যে, খুশিতে খাওয়াচ্ছি। ছেলেটি পাএ পক্ষ না আসার ফলে সেই আনন্দ কিভাবে উপভোগ করেছে তা হয়তো এই কথা তার প্রিয়তমাকে কিছু বলেনি। আসিকের কাছে এই খুশি ছিলো যেনো নতুন করে তাদের ভালোবাসা জন্মায়/ শুরু হওয়ার মতো ছিলো। এখানে একটা কথা নোট করার বিষয় আছে, ছেলেটি কিন্তু বন্ধুদের নিয়ে খুশির/ আনন্দের বহির্প্রকাশ করেনি। ছেলেটি পরিবারের আপনজনদের সাথে আনন্দের বহির্প্রকাশ করেছে। 

ছেলেটি একটু অন্য ধরনের ছিল। সে নেশাবদ করত না যেমন ধরো; বিড়ি, সিগারেট, খইনি, গুটকা, অ্যালকোহল ড্রিঙ্কস মদ ইত্যাদি। এমনকি পান পর্যন্ত নয়। যেহেতু ছেলেটি গ্ৰামের ছিলো, তাই গ্ৰামের মধ্যে পান খাওয়া সাধারণ বিষয় ছিলো। ছেলেটি নীতি ছিলো সে এমন কিছু জিনিষ নিজে খাবে না আর অন্যকেও খাওয়াবে না। এটাতো স্বাভাবিক যে তার মানে ছেলের বন্ধু খুব কম হবে। হ্যাঁ ছেলেটির বন্ধু নাম মাএই ছিলো। ছেলেটি তার বন্ধুদের নানা কথায় সহমত রাখত না, অনেক বন্ধু তাকে ছেড়ে চলে গেছে। যদিও বা কয়েকজন উওম বন্ধু ছিল। কিন্তু তারা বিদেশে ছিলো। যারা বিদেশে আছে, তাদের সাথে আনন্দের বহির্প্রকাশ করাত সম্ভব নয়। তাই ছেলেটি নিজের আনন্দের বহির্প্রকাশ পরিবারের সাথে করে, এমনিতে ছেলেটিও তার পরিবারকে খুবই ভালোবাসে। যাদেরকে ভালোবাসা যায়, তাদের সাথে আনন্দ করা এটাই স্বাভাবিক। 

বিরহের প্রেমের গল্প অপরিচিত মেয়েটি নাম আসা

বেশ ভালোই এইভাবে তাদের ভালোবাসা চলতে থাকে। তারা একের অপর নিয়ে খুব খুশি ছিলো। বিরহের প্রেমের গল্পে আসিক সম্পুর্ণ মন-প্রাণে মেয়েটিকে ভালোবাসতো। শুরুতে আমরা প্রথম ভাগে দেখেছিলাম যে, আসিক বলে ছেলেটি অজানা কোনো নাম্বারে কল - টল আসলে কথা বলা পছন্দ করত না। এবং ফেক - টেক কল মাধ্যমে মানুষের সাথে প্রতারণা বা প্রেমের জালে ফাসিয়ে টাকা নেওয়ার নিনজা টেকনিক ইত্যাদি কারণে জন্য নিজের সম্পর্কে অজানা ব্যক্তিকে পরিচয় দেওয়া ও পছন্দ করত না। যারা এই কাহিনীটি পড়ে বোরিং হচ্ছেন, তারা বলতে পারে ভাই নামে কি আছে! সেটা বলুন এবং কাহিনীর আগে দিকে চলুন। ছেলেটির কাছে এই নামে অনেক কিছু স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। 

তবে মুল স্মৃতি হল ভালোবাসার সত্যতা পরিচয়। মেয়েটি সত্যের সহিত ছেলেটির সাথে পরিচয় ঘটায়। হয়তো ছেলেটি কিন্তু তার সঠিক নাম না জানিয়েই পরিচয় ঘটিয়েছিল। কিন্তু মেয়েটি তা করেনি, মেয়েটি তার নিজের যেই নাম ছিলো তা দিয়েই আসিক বলে ছেলেটির সাথে কথা বলতে থাকে। আসিক যখন সম্পুর্ন মন - প্রাণের মেয়েটিকে ভালোবাসতে থাকে, তখন তাদের প্রথম পরিচয় কথা খুব ভাবে এবং সেই পরিচয় কথা চিন্তা করলে নিজেকে নিজে ক্ষমা করতে পারে না। কারণ আসিক মেয়েটির সাথে সত্যের সহিত আলাপ করেনি। হ্যাঁ, মেয়েটির মন ছলনা তো ছিলো না। 

এই সত্যের সহিত নামের মাধ্যমে আলাপ করার জন্যই ছেলেটি নিজের জীবন থেকে অধিক পরিপূর্ণ ভালোবাসায়, ভালোবাসতে থাকে। এবং সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাসের মাধ্যমে মেয়েটিকে স্ত্রী হিসাবে গ্ৰহণ করে, অর্থাৎ বলা যায় স্ত্রীর মতো সব অধিকার দিয়ে ফেলে। হয়তো এখনও তারা সামনাসামনি দেখা করেনি বা বিয়ে হয়নি। কিন্তু আসিক বলে ছেলেটি বিশ্বাসের সহিত মেয়েটিকে স্ত্রী হিসাবে মানে। হ্যাঁ বেশ ভালোই বিশ্বাসের ভিত্তিক করে তারা একের অপরকে ভালোবাসতে থাকে। কাহিনীতে টুইস্ট অর্থাৎ মোচড় বা পেচ যাই বলতে পারেন তা এখনও শুরু হয়নি, কাহিনীতে কি টুইস্ট রয়েছে তা জানতে তৃতীয় পর্ব অবশ্যই পড়ুন। সত্যি টুইস্ট অত্যান্ত বেদনা দায়ক ছিলো।

নোট - তৃতীয় পর্ব অবশ্যই দেখুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ